ছোট বেলায় হাতেখড়ি বাবার কাছে।
সন্ধ্যায় হারিকেনের আলোয় পড়তে বসতাম। বাবা আমাদের পড়াতেন, চোখ ঘুমে ঢলে পড়তো। বাবা বাংলা কবিতা পাঠ করতেন সুন্দর করে। আমরা ঘুম ঘুম চোখে শব্দ করে তার মুখে মুখে বলে উঠতাম। জানালা খোলা, বাহিরে ঘুটঘুটে অন্ধকার ঝিঁঝি পোকার ডাক শোনা যেত। আর আমরা শব্দ করে পড়তে থাকতাম। সে শব্দ বাড়ির উঠান অবধি যেত। আমাদেরও ছুটির ঘন্টা বাজতো, বাড়ির উঠানে এসে বসে, বাতির আলোতে জোনাকির খেলা দেখতাম!
দুপুর বেলায় রাস্তা থেকে ঠাস ঠাস করে একটা আওয়াজ শোনা যেত। আমরা বুঝতাম; আইসক্রিম ওয়ালা এসেছে। জমিয়ে রাখা বোতল নিয়ে ছুটে যেতাম। জিহ্বা দিয়ে আইসক্রিম চাটতে চাটতে খুশি মনে বাড়ি ফিরতাম। একদিন বাবা দেখে গিয়ে আচ্ছা করে পিটুনি দিয়ে বলেছিলেন, ওরা ছেলে ধরা।
ছেলে ধরা কি শুধু ছেলেদের ধরে নিয়ে যায়? তখনো বাবাকে এই প্রশ্ন করার সাহস জোগাতে পারলাম না।
সময়ের পালাবদলে একটু একটু করে বড় হলাম। বাবা দেখেন তার মেয়ে লেখালেখি করে। মাঝেমধ্যে তিনি সে লেখা পড়ে হাসেন। মানুষকে বলে বেড়ান। এই ছোট্ট জীবনে এরচেয়ে বড় প্রাপ্তি বোধ হয় আর কিছু-ই পাওয়ার নেই।