সমরেশ মজুমদারের কুশলী কলমে এই নতুন উপন্যাসের প্রেক্ষাপট আকস্মিক অতিমারি করােনাভাইরাস। যে বিষয়-ভাবনা বাংলা কাহিনির মানচিত্রে যােগ করেছে আরও এক মাত্রা। সমাজের বিবিধ স্তরের মানুষের চলমান জীবন হঠাৎ যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। অতিমারির মৃত্যুভয় নারী ও পুরুষের আবহমান সম্পর্কে এনেছে নতুনতর বাঁক। সুজন, লহমা, শরৎচন্দ্র, জনৈক ডাক্তারবাবু আর তাঁর স্ত্রীর, প্রতিদিনের জীবনের টুকরাে কথা কেবল নয়’ এ-উপন্যাস, তা আমাদেরও জীবনচিত্র সময়ের দর্পণ। প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে মিশে থাকা চাওয়া-পাওয়ার কৈফিয়ত। সারা পৃথিবীতে যখন আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ছে প্রায় অজানা এই ভাইরাস, আমাদের কলকাতাও বাদ যায় না। অভিজাত এক ক্লাবের সান্ধ্য আড্ডা থেকে হালকা চালে শুরু হয় কাহিনি। সেই আড্ডায় প্রসঙ্গক্রমে এসে পড়ে করােনাভাইরাসের কথা। যার আতঙ্ক তাড়া করে ফিরবে শহরবাসীদের। এই শহরের সত্তার উপর চেপে বসে দ্বিধাদ্বন্দ্বময় ঘরবন্দি জীবন। চরিত্ররা কখন যেন নিজের কাছেই হয়ে ওঠে অপরিচিত। আজকের এই অদ্ভুত সময়ের আদলেই লেখক শুনিয়েছেন আমাদের অস্তিত্বের সুখ-দুঃখ। যেখানে গােটা পৃথিবী বসে আছে হাতে দস্তানা আর মুখে আড়াল বেঁধে! সুজন-লহমার দাম্পত্যকথা বা ডাক্তারবাবুর জীবনের মতাে অসংখ্য জীবন পেরিয়ে, বস্তুতই আলাদারকম উপন্যাস ‘অবগুণ্ঠন’।