শীলার মা আছে, বাবা কাছে নেই। ওর কিছুই নেই মূলত। কারণ চারপাশের অনৈতিকতা অস্থিরতা আর না পাবার বেদনায় সে সব সময়ই হতাশ। জীবনের প্রথমভাগেই না পেয়ে পেয়ে সে অতিষ্ট। ভার্সিটিতে ঢুকেই সে রাজনৈতিক মহাপ্রলয়ের মুখােমুখি। দেশের মানুষ যখােন চরম উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তি পাবার জন্যে উদগ্রীব তখােন তার ভেতরের যে মানুষটিকে নিয়ে সে সবেমাত্র স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছিলাে সেই মানুষটিকেও সে পাচ্ছেনা দেখছেনা। মহাপ্রলয়ের ভেতরও সে সুখি হতে চেয়েছিলাে সকলের সাহচর্যে। কিন্তু প্রিয় সেই যুবকটিকেও কারাগারে নেয়া হয়েছে। শীলার এই কষ্টের সময় বাবা এসে দাঁড়ায় তার কাছে, মুখােমুখি নয়। মােবাইলের মাধ্যমে বাবা তাকে মােটিভেশন দিয়ে ফের মেরুদন্ড সােজা হয়ে দাঁড়াতে বলেন। বাবা আর প্রিয় সেই মানুষটির স্মৃতি ধরে নতুন করে দাঁড়াতে শিখে শীলা। তার ভেতর আবার অনেক সুখের ছায়া সে দেখতে পায়।
বিষয়বস্তু,আঙ্গিক, লিখনরীতিতে শাওন আসগরের সিদ্ধহস্তের পরিচয় উপস্থিত। জীবনের বহুধানিষিক্ত রস, আবেগ আর প্রেমের ফোঁটা ফোঁটা স্পর্শের অন্বেষণ করেছেন লেখক। সমাজের উচ্চ-নিম্ন আস্থাকুড় থেকে পলে পলে সমস্যা ও সমাধানের উৎস খুঁজে লেখক বর্তমান বিকারগ্রস্থ, অনৈতিকতাপূর্ণ আর আত্বচেতনাহীন সমাজ পচনের কথাই তুলেছেন। তাঁর বর্ণনাগুন, ভাষার চাতুৰ্য্য এবং বিষয়বস্তুতে সহজ সরলীকরণ সংযােজন একটি বিরাট কৃতিত্ব। মাটির সাথে সংযুক্ত মনুষ্যজীবন, বাংলার চিরায়ত সবুজরুপের প্রেম যেমােন তিনি ছেঁকে ছেঁকে এনেছেন তেমনি শহর।